এখন ১১ শতাংশ ঋণের সুদহার

সরকার সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি সরকার ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা ধার করে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এখন টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়া বন্ধ করেছে সরকার। এর ফলে ঋণের জন্য ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে। এতে ট্রেজারি বিলের ওপর সুদের হার ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলামে বিভিন্ন মেয়াদি বিলের সুদহার ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। এই নিলামের মাধ্যমে আজ পাঁচ হাজার ১৪২ কোটি টাকা ধার করেছে সরকার।
চলতি ডিসেম্বর মাসের জন্য স্মার্ট রেট হচ্ছে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, নভেম্বর মাসে যা ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো তিন দশমিক ৭৫ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাড়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিতে পারে।
এদিকে ট্রেজারি বিলের ওপর নির্ভর করে এখন ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে। ফলে আগামী বছরের শুরুতে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার আরও বাড়বে। যে পদ্ধতিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটাকে বলা হয় স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত নিলামে ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১১ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ।
আজ ৯১ দিন মেয়াদে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সরকার, তবে শেষ পর্যন্ত তোলে ৪ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। সূত্রগুলো জানাচ্ছে, এর ফলেই সুদহার বেড়ে যায়। ১৮২ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমে দেড় হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা করলেও সরকার শেষ পর্যন্ত তোলে ৫০১ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৩৬৪ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমে দুই হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা করলেও তোলে ৪২২ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ধারণা, ট্রেজারি বিলের সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত উঠতে পারে। এতে ঋণের সুদহারও বাড়বে। তবে সুদহার বাড়লে ঋণ বিতরণ কমে এবং তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, দেশে গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও কিছুটা বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে।
চলতি ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য সম্প্রতি নীতি সুদহার বা রেপো রেট একবারে দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। নতুন রেপো রেট ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৫ অক্টোবর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে। এর পর থেকে সব ধরনের সুদের হার বাড়তে শুরু করে।

You May Also Like

+ There are no comments

Add yours