যমুনা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধের উদ্বোধন, অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থাঃ বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলাধীন সলিমাবাদ, বলরামপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকা এবং মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলাধীন চরকাটারি এলাকাসমূহ যমুনা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে যমুনা নদীর বামতীর বরাবর ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে জিও ব্যাগ দ্বারা নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি।

এসময় দেয়া বক্তব্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন অনেক কষ্ট করেছেন। নিশ্চিন্তপুর একটি গ্রাম ছিলো সেই গ্রাম এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর, জমি হারিয়েছে। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। আজ তাদের খুশির দিন। এসময় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে শুরু করে আরিচা ঘাট পর্যন্ত একটি রিংরোড করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়িত এই প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কাজে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। কেউ অনিয়ময়ে জড়িত থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, আজকে স্থায়ী বাঁধের কার্যক্রম শুরু হলো নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার মাধ্যমে। এরপর সিসি ব্লক দেয়া হবে।
এই প্রকল্পের শুরু হতে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করার জন্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।

দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলায় রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসই অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চলমান রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন এই বাঁধের কাজ শুরু করতে না পারা আমার একটা অপূর্ণতা ছিলো। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে স্থায়ী বাঁধের কাজটা শুরু করতে পারলাম।এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ মোচন হতে চলেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, নদীর পাশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে হয়তো অনেকের জমি লাগতে পারে। যাদের জমি সরকারি কাজে লাগবে ইউএনও’র মাধ্যমে তাদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। কাউকে বাধা না দেয়ার অনুরোধ করে সবাইকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ইজরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে পণ্য পরিবহনে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। সরকার সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালে রাখার চেষ্টা করছে।

আহসানুল ইসলাম আরো বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে অতি মুনাফার লোভে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আসন্ন রমজান মাসে চিনি-তেল এবং খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের আহবান জানিয়ে বলেন, পবিত্র এই মাসে বিশ্বের সকল মুসলিম দেশ পণ্যের দাম কমিয়ে দেয় আর আমরা বাড়িয়ে দেই। এই প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি। দেশী-বিদেশী চক্রান্ত চলমান রয়েছে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নেতাকর্মীদের আহবান জানান।

উল্লেখ্য, যমুনা নদীর ভাঙনের করাল গ্রাস থেকে রক্ষাকল্পে ‘Flood and Riverbank Erosion Risk Management Investment Program (Project-02)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

You May Also Like

+ There are no comments

Add yours